সর্বশেষ সংবাদ

আমাদের স্লোগানঃ

জাতীয়তাবাদ সেবা ঐক্য প্রগতি

৫ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার।

বেগম খালেদা জিয়া

(১৯৪৬ সালের ১৫ আগস্ট জন্ম গ্রহণ করেন)

তিনি ১৯৯১-১৯৯৬ সাল,১৯৯৬ ১৫ ফেব্রুয়ারী-৩০ মার্চ ১৯৯৬ এবং ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত তিন দফায় মোট ১০ বছর ১ মাস ১৫ দিন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম ও মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী।

বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (Bangladesh Nationalist Party- BNP) বিএনপির প্রধান। আমাদের জাতীয় রাজনীতির প্রাণশক্তি। বেগম খালেদা জিয়া ১৯৪৬ সালের ১৫ আগস্ট জন্ম গ্রহণ করেন।

বেগম খালেদা জিয়ার প্রকৃত নাম খালেদা খানম, ডাক নাম পুতুল। তিন বোন এবং দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি তৃতীয়। ভাইয়েরা সবার ছোট। তাঁর পিতামহ হাজী সালামত আলী,মাতামহ তোয়াবুর রহমান। বাবা জনাব ইস্কান্দার মজুমদার এবং মা বেগম তৈয়বা মজুমদার।

খালেদা জিয়ার স্বামী বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি লেফটেন্যান্ট জেনারেল জিয়াউর রহমান বীর উত্তম। তার এক ভাই মেজর(অবঃ) সাইদ ইস্কান্দার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল থেকে ফেনী-১ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন।


তার দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে তারেক রহমান (জন্মঃ ২০ নভেম্বর ১৯৬৭) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তার কনিষ্ঠ ছেলে আরাফাত রহমান কোকো (১২ আগস্ট ১৯৭০-২৪ জানুয়ারি ২০১৫)।অবৈধ ফকরুউদ্দীন-মঈনুদ্দীন সরকার অন্যায়ভাবে মিথ্যা, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় তাকে গ্রেফতার করে এবং রিমান্ডের নামে অমানবিক অত্যাচার চালায়।পরবর্তীতে হাসিনা সরকারও বিভিন্ন মিথ্যা মামলা ও মানসিক নিপীড়ণ অব্যাহত রাখে। জনাব আরাফাত রহমান কোকো ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি মালায়া হাসপাতালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান।তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ও সিটি ক্লাবের সাথে যুক্ত ছিলেন এবং বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক ছিলেন।

বেগম খালেদা জিয়ার শৈশব কাটে দিনাজপুর শহরের মুদিপাড়ায়। আদি পিতৃ ভিটা ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের মজুমদার বাড়ী। বাবা জনাব ইস্কান্দার মজুমদার ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। বেগম খালেদা জিয়ার স্কুলজীবন শুরু হয় পাঁচ বছর বয়সে দিনাজপুরের মিশন স্কুলে। এরপর দিনাজপুর গার্লস স্কুলে ভর্তি হন। পরবর্তীতে পড়াশুনা করেন সুরেন্দ্রনাথ কলেজে। ১৯৬০ সালের আগস্ট মাসে জিয়াউর রহমানের সাথে তার বিয়ে হয়। জিয়াউর রহমানের ডাক নাম কমল। জিয়া তখন ছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন ক্যাপ্টেন। ডি এফ আই এর অফিসার হিসাবে তখন দিনাজপুরে কর্মরত ছিলেন। ১৯৬৫ সালে খালেদা জিয়া স্বামীর সাথে পশ্চিম পাকিস্তানে যান। ১৯৬৯ সালের মার্চ পর্যন্ত করাচিতে স্বামীর সাথে ছিলেন।এরপর ঢাকায় চলে আসেন। কিছুদিন জয়দেবপুর থাকার পর চট্টগ্রামে স্বামীর পোস্টিং হলে তার সঙ্গে সেখানে বসবাস করেন। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে খালেদা জিয়া ১৬ মে নৌপথে ঢাকায় চলে আসেন। বড় বোন খুরশিদ জাহানের বাসায় ১৭ জুন পর্যন্ত থাকেন। ২ জুলাই সিদ্ধেশরীতে জনাব এস আব্দুল্লাহর বাসা থেকে পাক সেনারা তাকে দুই ছেলে সহ বন্দী করে। ১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে বন্দী ছিলেন। ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হলে তিনি মুক্তি পান। রাজনীতিতে আসার আগ পর্যন্ত বেগম জিয়া একজন সাধারণ গৃহবধু ছিলেন। জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি থাকাকালীনও রাজনীতিতে বেগম জিয়ার উপস্থিতি ছিল না।

১৯৮১ সালের ৩০ মে এক ব্যর্থ সামরিক অভুত্থ্যানে জিয়াউর রহমান নিহত হন। এরপর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা কর্মিদের আহ্ববানে ১৯৮২ সালে ৩ জানুয়ারি বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদ গ্রহনের মাধ্যমে রাজনীতিতে আসেন বেগম খালেদা জিয়া।তাঁর রাজনীতিতে আসার কয়েক মাসের মধ্যেই দেশে নেমে আসে সামরিক শাসন।১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ সেনাপ্রধান লেফটেনেন্ট জেনারেল এরশাদ বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে ক্ষমতাচ্যুত করেন। বেগম জিয়া এর বিরোধিতা করেন। ১৯৮৩ সালের মার্চ মাসে তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন। ১৯৮৩ সালের ১ এপ্রিল দলের বর্ধিত সভায় তিনি প্রথম বক্তৃতা করেন। বিচারপতি সাত্তার অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সালের ১০ মে পার্টির চেয়ারপার্সন নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হন। তার নেতৃত্বেই মূলতঃ বিএনপির পূর্ণ বিকাশ হয়।১৯৮৩ সালের ফেব্রুয়ারীতে সামরিক সরকারের শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে বেগম খালেদা জিয়ার রাজপথের আন্দোলন দেশের গণতান্ত্রিক শক্তিকে উজ্জীবিত করে তোলে এবং রাজপথ কাঁপানো আন্দোলনের সূচনা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্ববভৗমত্বের প্রতীক এবং মূর্তরুপ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী।গণতন্ত্র সম্পর্কে তাঁর যে দর্শন তাই তাঁকে টেনে এনেছে সাধারণ মানুষের কাছে।তিনি হয়ে উঠেছেন সাধারণ মানুষের শেষ ভরসা-স্থল। এদেশের রাজনীতিতে জীবদ্দশায় কিংবদন্তীতে পরিণত রাজনীতিাবদ বেগম খালেদা জিয়া।প্রায় তিন দশক দেশের রাজনৈতিক পরিমন্ডল উদ্ভাসিত করে রেখেছেন তিনি। রাজনৈতিক পরিমন্ডল আলোকিত করতেই বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে আবির্ভাব হয়েছিল সময়ের অনিবার্যতায়।দেশ ও জাতির এক সঙ্কটময় মুহুর্তে সাড়া দিয়ে শহীদ জিয়ার সহধর্মিনী গৃহবধূ বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতিতে এসেছিলেন। শহীদ জিয়ার আদর্শকে পাথেয় করে মা, মাটি ও মানুষের রাজনীতি বিকশিত করার সংগ্রামে অদম্য অবিচলতা তাঁকে দিয়েছে আপোসহীন নেত্রীর দুর্লভ সম্মান।

১৯৮৩ সালের বেগম জিয়ার নেতৃত্বে সাত দলীয় ঐক্যজোট গঠিত হয়। একই সময় এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়। বেগম জিয়া প্রথমে বিএনপিকে নিয়ে ১৯৮৩ এর সেপ্টেম্বর থেকে ৭ দলীয় ঐক্যজোটের মাধ্যমে এরশাদ বিরোধী আন্দোলন শুরু করেন। একই সময় তার নেতৃত্বে সাত দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন পনের দলের সাথে যৌথভাবে আন্দোলনের কর্মসূচী শুরু করে। ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত পাঁচ দফা আন্দোলন চলতে থাকে। কিন্তু ১৯৮৬ সালের ২১ মার্চ রাতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এরশাদের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিধান্ত নিলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে বাঁধার সৃষ্টি হয়। ১৫ দল ভেঙ্গে ৮ দল ও ৫ দল হয়। ৮ দল নির্বাচনে যায়। এরপর বেগম জিয়ার নেতৃত্বে ৭ দল, পাঁচ দলীয় ঐক্যজোট আন্দোলন চালায় এবং নির্বাচন প্রত্যাখান করে। ১৯৮৭ সাল থেকে খালেদা জিয়া এরশাদ হটাও এক দফার আন্দোলন শুরু করেন।বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে পরিচালিত গণআন্দোলন ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে। এর ফলে এরশাদ সংসদ ভেঙ্গে দেন।স্বৈরশাসক এরশাদের পতনের পর গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়।অবশেষে দীর্ঘ আট বছর একটানা নিরলস ও আপোসহীন সংগ্রামের পর ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে বিএনপি। খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। সেই নির্বাচনে খালেদা জিয়া মোট পাঁচটি আসনে অংশ নিয়ে পাঁচটিতেই জয়লাভ করেন।

  • ১৯৯১ সালের ১৯ মার্চ বেগম খালেদা জিয়া পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন। তার সরকার দেশে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার কায়েম করে। ২ এপ্রিল তিনি সংসদে সরকারের পক্ষে এই বিল উত্থাপন করেন। একই দিন তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ কে স্বপদে ফিরে যাবার ব্যবস্থা করে একাদশ সংশোধনী বিল আনেনে। ৬ আগস্ট ১৯৯১ সালের সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে দুটি বিল পাশ হয়।
  • সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার সার্থে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়।সে নির্বাচনেও বিএনপি সংখ্যাগরিষ্টতা লাভ করে এবং তিনি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।যদিও সে সংসদের স্থায়িত্বকাল ছিল স্বণ্প সময়ের জন্য।
  • ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি মোট ১১৬ আসনে জয় লাভ করে, যা সরকার গঠনে যথেষ্ঠ ছিলনা। আওয়ামী লীগ মোট ১৪৭ আসন লাভ করে, তারা জাতীয় পার্টির সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করে। বিএনপি সপ্তম সংসদে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহত্ বিরোধী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। বেগম খালেদা জিয়া আওয়ামী লীগের পাঁচ বছর শাসনকালে সংসদে বিরোধী দলনেত্রী ছিলেন ।
  • ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি চারদলীয় ঐক্যজোট বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। খালেদা জিয়া এই সংসদেও প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর এই সংসদের মেয়াদ শেষ হয়।
  • ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অবধৈ ফকরুউদ্দীন-মঈনুদ্দীন সরকারের অধীনে নজিরবিহীন ভোট কারচুপির মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে জিতিয়ে দেওয়া হয়
  • ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন জোট সহ বাংলাদেশের প্রায় সবগুলো রাজনৈতিক দল বর্জন করে।
  • ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিশ্বে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার জন্য এক কলঙ্কজনক অধ্যায়।নীশিরাতের এ নির্বাচন এদেশের জনগণ ঘৃনাভরে প্রত্যাখান করেছে।

১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি বিএনপির প্রাথমিক সদস্য হিসেবে দলে যোগ দেবার পর থেকে মোট চার বার তিনি গ্রেফতার হন। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় ১৯৮৩ সালের ২৮নভেম্বর, ১৯৮৪ সালের ৩মে, ১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর গ্রেফতার হন। সর্বশেষ ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বর অস্বাভাবিক,অসাংবিধানিক ও অবধৈ ফকরুউদ্দীন-মঈনুদ্দীন সরকারের অধীনে জিয়া পরিবারের ওপর নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন। ৩ সেপ্টেম্বর তারিখে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত মামলায় পুত্রসহ গ্রেফতার হন বেগম খালেদা জিয়া। ২০০৮ সালের ১১ই সেপ্টেম্বার তিনি হাইকোর্টের নির্দেশে মুক্তিলাভ করেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার কর্তৃক গ্রেপ্তার হবার পর দীর্ঘ এক বছর সাত দিন কারাগারে অবস্থানকালে তাঁর বিরুদ্ধে চলতে থাকা কোন মামলারই উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি হয়নি এবং চলতে থাকা তদন্তে তাঁর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগই প্রমাণিত হয়নি। ১৩ নভেম্বর ২০১০ বেগম জিয়ার শেষ আশ্রয়স্থলটুকুও কেড়ে নেয়া হয়। তার ২৮ বছরের আবাসস্থল থেকে বলপ্রয়োগ করে বাসা থেকে বের করে দেয়া হয়।স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সাল থেকে অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল হিসেবে জিয়াউর রহমানের সাথে শহীদ মইনুল সড়কের ৬ নম্বর বাড়িতে ওঠেন খালেদা জিয়া। ১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি জিয়া চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সেনা অভ্যূত্থানে নিহত হলে ১২ জুন তৎকালীন অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তার সেনানিবাসের ওই বাড়িটি খালেদার নামে বরাদ্দ দেন। বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে সাধারণ মানুষের সমর্থন ভালোবাসায় ধন্য হয়ে রাজনীতিতে আছেন।এদেশের মানুষ বেগম খালেদা জিয়াকে দেশনেত্রী উপাধিতে ভূষিত করেছে।১৯৮৮ সালের চট্রগ্রামের ঐতিহাসিক লালদীঘী ময়দানের স্মরনকালের বিশাল জনসভা থেকে বেগম জিয়াকে উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

দেশের উন্নয়নে বেগম খালেদা জিয়া

  • জনগণের জান, মাল ও সম্ভ্রম রক্ষা এবং দেশে শান্তি, শৃঙ্খলা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থের উর্ধ্বে থেকে আইন-বিরোধী কার্যক্রম এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী কার্যক্রম কঠোরভাবে দমন করার লক্ষে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) প্রতিষ্ঠা করা হয়। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করার জন্য তাদেরকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, উন্নত সরঞ্জাম, আধুনিক অস্ত্র ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা দিয়ে অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার উপযোগী বাহিনী হিসাবে গড়ে তোলা হয়।
  • সমাজের সকল স্তরের এবং সব শ্রেণীর মধ্যে দুর্নীতির প্রসার ঘটেছে। এ বিষয়ে দেশে ও বিদেশে ব্যাপক এবং অনেক ক্ষেত্রে অতি প্রচারণা হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ সৎ ও নৈতিক জীবন-যাপন করলেও বিশেষত বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই অবস্থার পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন প্রতিষ্ঠা করা হয়। দুর্নীতি দমন কমিশনকে স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং সংবিধান ও আইনের অধীনে কার্যকরভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার পাশাপাশি দুর্নীতির বিরুদ্ধে সচেতনতা ও জনমত সৃষ্টির জন্য নির্বাচিত স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ, মিডিয়া এবং জনগণের সক্রিয় সহযোগিতা নেয়া হয়
  • বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতি ও বিএনপি প্রায় সমার্থক। বিএনপি যখনই দেশ সেবার দায়িত্ব পেয়েছে তখনই দেশে ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে। পুনঃনির্বাচিত হলে উৎপাদন ও উন্নয়নের রাজনীতিতে বিশ্বাসী বিএনপি সরকার অর্থনেতিক উন্নয়নের এই ধারাকে আরও বেগবান করার লক্ষ্যে জাতীয় অর্থনীতি এবং শিল্প ও বাণিজ্যের অব্যাহত উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য বেসরকারি খাত ও সমবায়কে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। দেশী, বিদেশী বিনিয়োগকারীরা, বিশেষ করে প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা দিয়ে দেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত করা হয়। দেশের সবচেয়ে বেশী শ্রমিক বিশেষ করে বিপুল সংখ্যক নারী শ্রমিক নিয়োগকারী এবং সবচেয়ে বেশী বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী গার্মেন্টস শিল্পকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে ও আরও সম্প্রসারিত হতে সব ধরনের সহায়তা দেয়া হয়। দেশীয় শিল্প, বিশেষ করে পাট, চা, বস্ত্র, চিনি, ঔষধ, সিরামিক ও চামড়া শিল্পের সুরক্ষা ও অব্যাহত উন্নয়নের লক্ষ্যে সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উ ন্নয়নের লক্ষ্যে দেশের শিক্ষিত যুবশক্তি, নারী উদ্যোক্তা এবং সমবায়ীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ ও ঋণ-সহায়তা দেয়া হয়। রপ্তানি বাণিজ্যে ভারসাম্য আনা এবং অধিকতর কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কৃষিভিত্তিক ও রপ্তানিমুখী শিল্পস্থাপন ও প্রসারে সর্বাত্মক সহায়তা দেয়া হয়
  • কৃষিপণ্যের উৎপাদন ব্যয় যথাসম্ভব হ্রাস করে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল ও দ্রুত কমিয়ে আনার লক্ষ্যে কৃষি খাতের আধুনিকায়ন ও উন্নয়নের লক্ষ্যে নতুন নতুন প্রযুক্তি, গবেষণা ও গবেষণালব্ধ ফলাফলকে মাঠে প্রয়োগের ব্যবস্থা নেয়া হয়। কৃষক যাতে উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় এবং ভোক্তাগণকে যাতে অতিরিক্ত মূল্যে দ্রব্যাদি কিনতে বাধ্য হতে না হয় সেই লক্ষ্যে কৃষি পণ্যের যথাযথ সংরক্ষণ, পরিবহন এবং বাজারজাতকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়।
  • নানা প্রতিবন্ধকতার ভেতরেও চারদলীয় জোট সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে নকলমুক্ত পরীক্ষা, মেয়েদের বিনামূল্য পড়ালেখাসহ শতাধিক উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি ও উন্নীত করে। দারিদ্র অথচ মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বৃত্ত্বির ব্যবস্থা করা হয়।
  • সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হলে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। গ্রামীণ অঞ্চলে কর্মসংস্থানের দিকে অধিক জোর দেয়া হয়। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে উৎসাহ দিয়ে গ্রামীণ অর্থনীতি জোরদার, সমবায় আন্দোলনকে সহায়তা প্রদান করা হয়। দেশে অধিকহারে শ্রমঘন শিল্প স্থাপন ও বন্ধ শিল্পে পুনরায় উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করার জন্য উৎসাহ দান করা হয়। বিদেশে দক্ষ শ্রমিকদের অধিকহারে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। আত্মকর্মসংস্থানের উদ্যোগে সহয়তা দান করার মত বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
  • বিএনপি ও চারদলীয় জোট সরকারের আমলে দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার যুগান্তকারী উন্নয়ন হয়। দেশের সবকটি প্রধান হাইওয়ের উন্নয়ন, বড় বড় নদীর ওপর ব্রীজ নির্মাণ, চট্টগ্রামে নিউমুরিং টার্মিনাল নির্মাণ, বাংলাদেশ রেলওয়ের আধুনিকায়ন, ভৈরবের কাছে মেঘনা সেতু নির্মাণ ও মুন্সীগঞ্জে ধলেশ্বরী সেতু নির্মাণ, কর্নফুলী নদীর ওপর তৃতীয় সেতু নির্মাণ কাজে অগ্রগতি, পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও জাপানের অর্থ সাহায্যের প্রতিশ্রুতি প্রাপ্তি ও সম্ভাব্যতা যাচাই কাজের সমাপ্তি, চট্টগ্রাম ও সিলেট এয়ারপোর্টে নতুন দুটি টার্মিনাল বিল্ডিং নির্মাণ, এসবই হচ্ছে বিগত বিএনপি ও চারদলীয় জোট সরকারের পাঁচ বছরে যোগাযোগ খাতে উন্নয়নের রেকর্ড।
  • দেশের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রশাসনকে জনগণের হাতের কাছে নিয়ে যাওয়া এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ও গ্রাম পর্যায়ে যোগ্য নেতৃত্ব সৃষ্টির লক্ষ্যে বিএনপি সবসময়ই কাজ করেছে। এ লক্ষ্যে নির্বাচিত বিএনপি সরকার প্রচলিত স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ক্ষমতা ও দায়িত্ব বহাল রেখেই স্থানীয় উন্নয়ন ও জনকল্যাণে প্রান্তিক জনগণের অংশগ্রহণের সুযোগ সম্প্রসারিত করে।
  • জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে প্রতিরক্ষা ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের পাঠানের নীতি অব্যহত রাখা হয় এবং এর ক্ষেত্র আরো সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়।
  • সহজে ও কম খরচে, দ্রুত বিচার পাওয়ার জন্য এবং দেশের ঘুণে ধরা বিচার ব্যবস্থাকে গতিময় এবং জনগণের আস্থাশীল প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার লক্ষ্যে বিগত বিএনপি জোট সরকার বিচার বিভাগকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে এক ঐতিহাসিক সংস্কার কার্যক্রমের সূচনা করে।
  • নারীদের ক্ষমতায়ন ও মর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্যবসায়ে আগ্রহী ও আত্মকর্মসংস্থানমূলক কর্মে নিয়োজিত নারীদের জন্য সহজ শর্তে ও কম সুদে ঋণ প্রদান করা হয় এবং চাকরিতে নারীদের নিয়োগ ও পদোন্নতিতে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। যৌতুক প্রথা, এসিড নিক্ষেপ এবং নারী ও শিশু-পাচার রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়। মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার ন্যূনতম পর্যায় নামিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকে।
  • ২০০১ সালে বিএনপি নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী ফাইবার অপটিক সাবমেরিন কেবল সংযোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ এখন ইনফর্মেশন হাইওয়েতে পৌঁছে গেছে। বিএনপি ও চারদলীয় জোট সরকারের ২০০১ সালে দায়িত্ব গ্রহণের সময়ে মোবাইল ফোনের সংখ্যা ছিল মাত্র ৫০ লাখ। ২০০৬ সালের শেষে এই সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় তিন কোটি।
  • চারদলীয় জোট সরকারের আমলে গ্রামীণ এলাকায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃব্যবস্থা প্রবর্তনের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছিল। ফলে এখন শতকরা নব্বই ভাগ গ্রামবাসী বিশুদ্ধ পানি খেতে পারছেন এবং প্রায় সকলেই অল্প খরচে তৈরি স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃব্যবস্থা ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছেন। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ যথাসময়ের আগেই সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে।
  • পরিবেশ রক্ষায় বিএনপি ও চারদলীয় জোট সরকার তাদের শাসন আমলে পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার এবং দুই স্ট্রোক বেবিটেক্সি নিষিদ্ধকরণ, সারা দেশে বৃক্ষরোপণ ও বনায়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে সফল হয়েছিল।
  • দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসী শ্রমিকদের বিশাল অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে বিগত বিএনপি সরকার প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় গঠন করে এবং বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসসমূহ যাতে প্রবাসীদের কল্যাণে যথাযোগ্য ভূমিকা পালন করে, তার নিশ্চয়তা বিধানের প্রচেষ্টা নেয়া হয়।
  • যুদ্ধাহত ও দুঃস্থ মুক্তিযোদ্ধা, দরিদ্র ও নিঃস্ব নারী-পুরুষ-শিশু এবং অসহায় প্রবীণ নাগরিকদের জন্য পর্যায়ক্রমে একটি কার্যকর সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়।
  • সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি গভীরতর করা এবং সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের সমান অধিকার নিষ্ঠার সাথে রক্ষার নীতিতে অবিচল থেকে সাম্প্রদায়ক সম্প্রীতি বিনষ্টের সকল অপচেষ্টা কঠোরভাবে দমনের চেষ্টা করা হয়।
  • অনগ্রসর পাহাড়ী ও উপজাতীয় জনগণের সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য রক্ষা, চাকুরি ও শিক্ষা ক্ষেত্রে সকল সুবিধা সম্প্রসারণ এবং পার্বত্য অঞ্চলে উন্নয়ন কার্যক্রম জোরদার করা হয়।

গণতন্ত্রের আপোসহীন সৈনিক,বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপার্সন ,তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও দুই বারের বিরোধীদলীয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি জনগণের অকৃত্রিম ভালবাসা আজও অটুট।

Scroll to Top